Home » , , , » দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন

Written By Unknown on Monday, February 7, 2011 | 3:08 AM

কবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারী নির্যাতনের কৌশল হিসেবে দোররার ব্যবহার দেখতে হচ্ছে। আর সেই দোররা মারার কারণে নূরজাহানেরই পথ ধরে আরেক নারীকে চলে যেতে হলো গত ১৪ ডিসেম্বর। মৌলভীবাজারের নূরজাহান ফতোয়ার অপমান সইতে না পেরে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন; কিন্তু রাজশাহীর তানোর উপজেলার কচুয়া গ্রামের সুফিয়া বেগম দোররার আঘাতেই প্রাণ হারালেন।

এই দোররা মারার ফতোয়া দিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও গ্রাম্য প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ। এমনই ঘটনা ঘটে বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে। আমাদের সংবিধান কখনো তাদের সেই সুযোগ দেয়নি। তার পরও তারা একের পর এক এমন অনৈতিক কাজ করে চলেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ফতোয়াবাজরা নিজেদের কাজগুলোর পক্ষে সাফাই গেয়ে থাকে।
নারী নির্যাতনের এমন চেহারা প্রতিদিনই বাংলাদেশের কোনো না কোনো এলাকায় ঘটেই চলেছে। একই দিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে কুমিল্লায় আরেকটি নির্যাতনের ঘটনা। সেখানে ফতোয়ার ঘটনা না হলেও পৈশাচিক ঘটনা ঘটিয়েছে শ্বশুর। ওই ঘটনার শিকার লাভলী বেগম মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য কখনো কখনো সে নৈতিকতা বর্জিত কাজ করে ফেলে। কিন্তু সেই অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুর মতো চরম পরিণতি কাম্য নয়।
সুফিয়া বেগমের মৃত্যুর জন্য প্রকারান্তরে দোররা মারার ঘটনাই দায়ী। এই অভিযোগ যদি সত্য হয়, তাহলে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান অতি জরুরি।
দেশের উচ্চ আদালত থেকে যুগান্তকরী একটি রায় ঘোষিত হয়েছে ফতোয়ার ব্যাপারে। সেখানে স্পষ্টত বলা হয়েছে যে আইনানুগ কর্তৃপক্ষ ব্যতিরেকে কাউকে অপরাধী বিবেচনা করে এ ধরনের শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা কারো নেই। তবে এই রায় ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠীর পছন্দ হয়নি এবং তারা আদালতে আপিল করেছে। সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে হলে ফতোয়াকে পরিহার করতেই হবে। কারণ সংবিধানও নিশ্চিত করে দিয়েছে যে বিচারিক কাজ করা একমাত্র আদালতের দায়িত্ব। গ্রামে এ ধরনের ফতোয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে মূলত স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ পায় না ভুক্তভোগীরা। তারা বিচারও চাইতে পারে না কোথাও। তাই ফতোয়ার কারণে মৃত্যু না ঘটলে সাধারণত সংবাদমাধ্যমে এগুলো প্রচার পায় না। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের পেছনের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া যায়, তাহলে যারা অমানবিক কাজ করছে তাদের টনক নড়বে। এতে ফতোয়া দেওয়ার প্রবণতা যেমন কমবে, তেমনি নারী নির্যাতনের হারও কমতে থাকবে। ফতোয়ার মাধ্যমে আর যাতে কোনো নারীকে নির্যাতনের শিকার না হতে হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সে জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. XNews2X - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু